Spread the love

অসহায়দের পাশে ‘দশভুজা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

এযেন অনেকটা 'যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে'-র মত অবস্থা। সাহিত্য জগতের সুপরিচিত নাম হলো 'দশভুজা' সাহিত্য পত্রিকা গোষ্ঠী। সাহিত্যের টানে বাঙালি মেয়ে কৃষ্ণা চক্রবর্তী সুদূর জামশেদপুর থেকে ছুটে আসেন কলকাতায়। স্হানীয় কবি-সাহিত্যিকদের উপস্থিতিতে প্রকাশ করেন তার পত্রিকা। তবে তারা শুধু নিজেদের সাহিত্যচর্চার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেনি, দশভুজা মা দুর্গার মত দশটি হাত নিয়ে সমাজ সেবার কাজেও ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন 'দশভুজা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি'। লক্ষ্য অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

  গত কয়েক দিন ধরে উত্তুরের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ইঙ্গিত দিচ্ছে শীতের আগমনের। শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য নুন্যতম শীতের পোশাক নাই বহু গরীব মানুষের। এবার মানবিকতার তাগিদে গত ১৩ ই নভেম্বর তাদের জন্য 'সাহায্য শিবির'- এর আয়োজন করল সংশ্লিষ্ট সাহিত্য পত্রিকা গোষ্ঠী।

   প্রায় প্রতিবছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ক্যানিং অঞ্চলের বাসিন্দারা। কার্যত সব হারিয়ে তারা নেই রাজ্যের বাসিন্দা হয়ে ওঠে। এরকমই একটি এলাকা হলো হেরোভাঙ্গা রূপসাগর গ্ৰাম।  সেখানকার নয়াপাড়া অঙ্গন ওয়াড়ী প্রাক্ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে  আয়োজিত হয়  'সাহায্য শিবির'-এর। প্রায় ১৪৫ জন পুরুষ ও মহিলার হাতে তুলে দেওয়া হলো কম্বল, শাড়ী, শীতবস্ত্র, সালোয়ার কামিজ, নাইটি, ব্লাউজ ইত্যাদি এবং শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয় খাতা, পেনসিল, রবার, পেনসিল শার্পনার সহ বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী এবং সামান্য কিছু খাবার। এছাড়া আরও প্রায় ৫০ জনের বেশি মহিলা ও শিশুর হাতে তুলে দেওয়া হয় পরিধানযোগ্য পুরানো শীতের জামা কাপড়। শীতের মুখে এগুলি পেয়ে তারা খুব খুশি।

 দশভুজা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির পক্ষ থেকে 'সাহায্য শিবির'-এ  উপস্থিত ছিলেন শ্রাবনী ঘোষ, শুভাশিস সরকার, কৃষ্ণা চক্রবর্তী, নন্দিতা চট্টোপাধ্যায়, রাখী চক্রবর্তী, চাঁদু সরকার, অরিজিৎ বসু প্রমুখ। অসহায় মানুষগুলির মধ্যে সংযোগকারী হিসেবে ছিলেন সংশ্লিষ্ট প্রাক্ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ঝুমা মাইতি বিশ্বাস। মূলত তার সহযোগিতার জন্য সমস্ত কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।

  'দশভুজা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি-র সভাপতি শ্রাবণী দাস বললেন - পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম বারের জন্য আমরা 'সাহায্য শিবির'-এর আয়োজন করলাম। দুঃস্থ ও অভাবী মানুষগুলোকে এইটুকুই সাহায্যের বিনিময়ে ফেরৎ পেলাম ওদের আশীর্বাদ এবং হাসিভরা মুখগুলো। আমাদের চলার পথে এটা বড় প্রেরণা।

 সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সংস্হার সম্পাদিকা কৃষ্ণা চক্রবর্তী বললেন - ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ইচ্ছে পূরণের জন্য পাশে পেয়েছি সমমনস্কা একগুচ্ছ সাথীকে। আজ সবাই মিলে ঐ অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুব ভাল লাগছে।

   জানা যাচ্ছে 'দশভুজা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি'-র পরবর্তী শিবির ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে জামশেদপুরের দলমা এলাকার এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হবে। সেদিনও উদ্যোক্তারা সবার সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *