Spread the love

‘অযোগ্যদের হাতে শিক্ষার ভার তুলে দেওয়া হয়েছে’

 সুবীরেশের জামিন খারিজ করে জানালো ডিভিশন বেঞ্চ  

মুকুল বিশ্বাস

বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই হেফাজতে থাকা প্রাক্তন এসএসসি কর্তা সুবীরেশ ভট্টাচার্য এর জামিন বিষয়ক মামলার শুনানি চলে। এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদন আরও একবার খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ।  জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের  পর্যবেক্ষণ, ‘দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে।

অযোগ্যদের চাকরি দিয়ে, যোগ্যদের শুধু বঞ্চিত করাই হয়নি। অযোগ্যদের হাতে আগামী প্রজন্মের শিক্ষার ভার তুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী প্রজন্মকে অনিশ্চিতয়ার দিকে ঠেলে দেওয়া চরম প্রতারণা,’।এইরকম কড়া পর্যবেক্ষণ ছিল এদিন সুবীরেশ ভট্টাচার্য ঘিরে।এই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের আরও  পর্যবেক্ষেণ, -‘ যেখানে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে, সেখানে সংস্থার সর্বোচ্চ পদে থাকা একজন ব্যক্তি এত সহজে দায় এড়াতে পারেন না’। এ ব্যাপারে বিচারপতি এদিন এজলাসে জানান , ”এটা কোনও পোস্টমাস্টারের চাকরি নয়। মনে রাখবেন এখানে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে। সেখানেও যদি দুর্নীতি হয়, তবে এটা তো সমাজের সঙ্গে বেইমানি করা হল।” কড়া মনোভাব নিয়েই এদিন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানায়, ”একজন পাবলিক সার্ভেন্ট এর উচিত তার কর্তব্য পালন করা। এই স্ক্যামে শিক্ষা ব্যবস্থাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা ১বছর পরে জামিনের কথা ভাববো।’বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের মামলার শুনানি। এদিন সুবীরেশের আইনজীবী আদলতকে জানান, -‘ তাঁর মক্কেল যখন এসএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন, সেই সময় নিয়োগ দুর্নীতি হয়নি। এর পর তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হন’। আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পরই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, ‘তিনি তো আর ভারতের রাষ্ট্রপতির ভাইস চ্যান্সেলর নন। অতএব, আমরা এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত নয়। আমরা জানতে চাই, দুর্নীতিতে সুবীরেশের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে।’এরপর সুবীরেশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে তাঁর আইনজীবী ডিভিশন বেঞ্চ কে  জানান, -‘ উনি পদে থাকাকালীন এই সব ঘটনা ঘটেনি। ২১ অক্টোবরের চার্জশিট অনুযায়ী, আমার মক্কেলের মৌখিক নির্দেশেই প্রোগ্রামিং অফিসার ওএমআর শিট পরিবর্তন করেছেন। কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে। এমনকি, এসএসসির ওয়েবসাইটেও নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে। অথচ এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য তৈরি উপদেষ্টা কমিটির মাথায় ছিলেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা। আমার মক্কেলকে প্রথমে সাক্ষী হিসাবে ডাকা হয়েছিল। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।’এরপরেই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বলেন, – ‘উনি একটি সংস্থার সর্বোচ্চ পদে ছিলেন। সেই জায়গায় কিভাবে আপনাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এড়িয়ে যেতে পারেন? যিনিই অভিযোগ আনুক, আপনি এত দিন কেন সচেতন হননি?” বিচারপতি ভর্ত্‍সনা সূরে বলেন , -‘ সংস্থার প্রতিনিধি হিসাবে আপনার দায়িত্ব রয়েছে। এটা কোনও পোস্ট মাস্টারের চাকরি নয়।’এদিকে, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সিবিআই-এর হাতে। তদন্তকারীদের দাবি, নম্বরে গড়মিল করে নিজের ভাগ্নেকেও চাকরি করিয়ে দিয়েছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। কীভাবে চাকরি পেয়েছিলেন সুবীরেশের ভাগ্নে, সেই তথ্য জানতেই এদিন নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে সুবীরেশের ভাগ্নেকে।এই মুহুর্তে সুবীরেশ ভট্টাচার্য এসএসসির এক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *