অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্কেলেই বেতন দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট এক মামলায় এক শিক্ষককে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্কেলেই বেতন দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে। নির্দেশ টি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ।জানা গিয়েছে, বর্ধমানের দধিয়া গোপালদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল কালাম আজাদ শিক্ষকতা করার সময় স্নাতকোত্তর ডিগ্রির বেতন পেতেন। ২০১৫ সালে অবসর গ্রহণের পর তাঁকে পেনশন দেওয়া হচ্ছে গ্রাজুয়েট স্কেলে। ২০১৯ সালে হাইকোর্টে মামলা করেন কালাম সাহেব। এদিন এক নির্দেশে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে -‘তাঁর সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে’।রাজ্য সরকারের দাবি -‘ ১৯৮৬ সালে বি কম ডিগ্রি নিয়ে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন আবুল কালাম সাহেব। এর পর তিনি রেগুলারে পোস্ট গ্রাজুয়েট করেন’। কিন্তু তাঁকে পোস্ট গ্রাজুয়েট করার অনুমতি দিল কে? প্রশ্ন তোলে রাজ্য।এর জবাবে শিক্ষকের আইনজীবী বেনজির আহমেদ বলেন, -‘আবুল কালাম সাহেবকে স্কুলে বাংলা পড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেজন্য স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তাঁকে স্নাতকোত্তর পড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান তিনি। সেকথা সংশ্লিষ্ট জেলা স্কুল পরিদর্শক কে জানানো হয়। এর পর তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে বেতন পেতে শুরু করেন’।এই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, -‘ বিনা অনুমতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকলে এতদিন কেন সরকারের নজরে পড়ল না। কেন অবসরের পর তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে। বেতন যে স্কেলে পেয়েছেন পেনশনও সেই স্কেলেই দিতে হবে মামলাকারী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কে। তাঁর সমস্ত বকেয়া শোধ করে দিতে হবে রাজ্য সরকারকে’। বর্ধমানের দধিয়া গোপালদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক আব্দুল কালাম আজাদ। বি.কম পাশ করে ওই স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। ১৯৮৬ সালে ‘গ্র্যাজুয়েট’ হিসেবে স্কুলে চাকরি শুরু করেন।পরে ওই স্কুলে বাংলায় শূন্যপদ থাকায় তাঁকে বাংলা পড়ানোর দায়িত্ব দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ।বাংলা পড়ানোর জন্য ১৯৯৯ সালে বাংলায় স্নাতকোত্তর পাশ করেন আব্দুল। তাঁর অভিযোগ, অবসরের আগে অর্থাৎ ২০১৫ সাল পর্যন্ত পোস্ট গ্র্যাজুয়েট হিসেবে বেতন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু ২০১৫ সালে অবসর নেওয়ার পর সেই স্কেলে পেনশন পাচ্ছেন না। অভিযোগ, গ্র্য়াজুয়েট হিসেবে সেই স্কেলেই পেনশন দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। ২০১৯ সালে মামলা করেন ওই শিক্ষক। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, -‘ওই ব্যক্তি নিজে স্কেল ঠিক করেন না’। শিক্ষককে এক মাসের মধ্যে যাবতীয় পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।