Spread the love

৫৪ বছর ধরে হাতে লেখা নিয়ে  শারদ পত্রিকা ‘অঞ্জলি’  এবারও বের হচ্ছে পূর্বস্থলীতে 

দীপঙ্কর চক্রবর্তী ;

শারদীয়া দূর্গা পুজোয় অনেকের অনেক রকম চিন্তা,ভাবনা দেখা যায়।সকলেই কম বেশি নতুন পোষাক কেনেন।সাজগোজের জিনিস,কেউ নতুন গাড়ি, ফ্ল্যাট,কত কি।সাহিত্যঅনুরাগীরা পূজো উপলক্ষে সাহিত্যের পুজো সংখ্যা প্রকাশ করে, সেই পত্রিকা দিয়ে,কবিতা,গল্প পড়িয়ে আনন্দ পান।তেমনি মনের আবেগ,সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসার টানে পূর্বস্থলীর চুপি,কাষ্ঠশালীর কয়েকজন উৎসাহি যুবক হাতে লেখা শারদ পত্রিকা প্রকাশ করেন।ত্রৈমাষিক হিসেবে ১৩৬৮ সাল থেকে সাতটি সংখ্যা তারা প্রকাশ করেন।রবীন্দ্র শতবর্ষ উপলক্ষেও একটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়।কয়েক জন শিক্ষিত যুবক বর্তমানে তারা সকলেই বৃদ্ধ,কেউ আর নেই এমন কয়েকজন শ্যামাপ্রসাদ দাস,ধর্মদাস মুখোপাধ্যায়,মৃত্যুন্জয় কুন্ডু,সুশীল ব্যানার্জী,রবীন্দ্রপ্রসাদ সরকার,তারকনাথ কুন্ডু,অরবিন্দ সিংহ,বিকাশেন্দু সিংহ সহ আরো অনেকে মোট সাতটি স্ংখ্যা প্রকাশ করেন।এই সংখ্যাগুলোতে কবিতা,গল্প,প্রবন্ধ,সুন্দর হাতে কলম দিয়ে লেখা হোত।সুন্দর ছবিও থাকতো।সাতটি সংখ্যা প্রকাশের পর সকলের বিভিন্ন কাজ,সাংসারিক কাজের জন্য পত্রিকা লেখা বন্ধ হয়ে যায়।পুরোনো সংখ্যা শ্যামাপ্রসাদ বাবুর বাড়িতে পুরোনো কাগজ,বইয়ের মধ্য মিশে ছিল।শ্যামাবাবুর একমাত্র পুত্র শিক্ষক অনিন্দ্য দাস কৌতুহলের বশে বাবার পুরোনো কাগজ,বই, পত্রিকা ঘাঁটতে ঘাঁটতে ৫৪ বছর আগের হাতে লেখা পত্রিকা অঞ্জলির কয়েকটি সংখ্যা উদ্ধার করেন।স্হানীয় লেখক পল্লব ঘোষাল,অচ্যিন্ত সিংহ,অমিত নাথ,সুদীপ বিশ্বাস,অবনী ভূষন বালাকে নিয়ে ১৪২২/২০১৫ সাল থেকে অঞ্জলির আবার হাতে লিখে প্রকাশ শুরু করেন।দেবী পক্ষ শুরু হয়ে গেল মহালয়ার সকালে পূর্বস্হলীর পিলসুজ ও আকাশের নীচে পত্রিকার সম্পাদক দীপঙ্কর চক্রবর্ত্তী ও রামকৃষ্ন ঘোষকে সাথে নিয়ে হাজির হয় শ্যামাপ্রসাদ দাসের বাড়িতে।তিনি ভগ্ন শরীর নিয়ে বসে দেখছেন তার সুযোগ্য পুত্র অনিন্দ কি সুন্দর ভাবে মমতা ভরা হাতে এবছরের ১৪২৯ এর অঞ্জলির কবিতা,গল্প কলমে সুন্দর হাতের ছোঁয়ায় লিখে চলেছেন।অলংকরন করছেন আবার ছবিও আঁকছেন।অনিন্দ বলে চলেন -‘ ভাগিরথীর এই পারের কত ইতিহাসের কথা,অক্ষয় দত্ত,সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এখানেই জন্মেছেন।কত স্মৃতি তার মধ্যে ৫৪ বছর আগে কয়েকজন তরুন যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে এই পত্রিকা পূর্বস্হলীর বুকে করেছিলেন।সেটি সাময়ীক কিছু বছর বন্ধ থাকলেও হারিয়ে যায় নি।আমাদের সকলের সহযোগীতায়, উৎসাহে কালের নিয়মে সেটি আবার ডালপালা মেলে ধরেছে।ইতিহাসের পাতা থেকে অঞ্জলি  কখন মুছতে দেবো না বাবা,কাকুদের স্নেহে লালিত এই পত্রিকা আমরা মহাকালের কাছে অর্পন করে এগিয়ে যাবো।তরুন প্রজন্ম দেখবে জানবে ছাপার অক্ষরের পত্রিকার থেকে হাতে লেখা এই পত্রিকা কোন অংশে কম নয়।অষ্টমীর বিকেলে প্রতিবারের মতই অনারম্বর অঞ্জলির উদ্বোধন কাষ্ঠশালীর শ্যামসুন্দরতলা পুজো মন্ডপে।সকলের আমন্ত্রন।এবছর অষ্টম সংখ্যা প্রকাশ পাবে’। এই পত্রিকার সম্পাদক অনিন্দ্য দাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *