শীতের মরসুমে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য কেরালা পর্যটন একটি সুবৃহৎ পরিকল্পনা করেছে
রাজকুমার দাস
উৎসবের মরসুমের উদ্যোগের সাফল্যস্বরূপ দেশীয় পর্যটকদের আগমনের ঢল থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে কেরালা পর্যটন শীতের মরসুমে আরও বেশি সংখ্যক দেশীয় ও বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য বেশ কয়েকটি প্রোগ্রাম তৈরি করেছে।
পর্যটন মন্ত্রী শ্রী পিএ মহম্মদ রিয়াস বলেছেন যে সদ্য সমাপ্ত উৎসবের মরসুমের পর্যটনে কেরালায় খুবই ইতিবাচক প্রভাব দেখা গিয়েছে, প্রচুর সংখ্যক দেশীয় পর্যটক রাজ্যে ঘুরতে এসেছেন এবং কোভিড-পরবর্তী পর্যায়ে এই পর্যটকদের এই উৎসাহে রাজ্যের পর্যটনকে পুনরায় নিশ্চিত করেছে।
তিনি জানিয়েছেন “শীতকালীন ছুটির মরসুমকে আমরা কেরালায় আরও বড় আকারে প্রচার করার জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছি, কেরালা টাইম ম্যাগাজিনের 2022 সালে বিশ্বের অবশ্য দ্রষ্টব্য 50টি অসাধারণ গন্তব্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রাজ্যের স্বতন্ত্রতা বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্যেই বর্তমান, পর্যটকদের জন্য থাকবে হাউসবোট, ক্যারাভান স্টে, জঙ্গল লজ, প্ল্যান্টেশন ভিজিট, হোমস্টে, আয়ুর্বেদনির্ভর সুস্থতা সমাধান, হেঁটে গ্রামাঞ্চল ঘুরে দেখার পাশাপাশি থাকবে সবুজ পাহাড়ে ট্রেকিং সহ বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার ক্রিয়াকলাপ”।
সম্প্রতি সমাপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স বোট লিগ (সিবিএল) সারা দেশের হাজার হাজার পর্যটক, ভ্রমণ ব্লগার এবং ভ্রমণ ফটোগ্রাফারদের আকৃষ্ট করেছে। বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত কোচি-মুজিরিস বিয়েনলে (কেএমবি), ডিসেম্বর 2022-এপ্রিল 2023 এর মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে, এটি দেশের এবং বিদেশের উভয় পর্যটকদেরকেই আকৃষ্ট করবে বলে তিনি আস্থা প্রকাশ করেছেন।
পর্যটনের প্রধান সচিব শ্রী কে এস শ্রীনিবাস বলেছেন যে, রাজ্যের ট্যুরিজম এবং হসপিটালিটি শিল্প ইতিমধ্যেই প্রাক-মহামারী অবস্থান ফিরে পেয়েছে। “এটির প্রমাণস্বরূপ দেখা যায় যে এক বছরের আগের সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন ত্রৈমাসিকে কেরালায় দেশীয় পর্যটকদের আগমনের 196 শতাংশ বৃদ্ধির রেকর্ড পরিলক্ষিত হয়েছে,” তিনি যোগ করেছেন।
কেরালায় এই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে মোট 1,33,80,000 জন দেশীয় পর্যটকের আগমনের রেকর্ড পরিলক্ষিত হয়েছে, যা প্রাক-কোভিড 2019 সালের এই একই সময়ের পর্যটক সংখ্যার তুলনায় 1.49 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
শ্রী শ্রীনিবাস ‘কেরাভ্যান কেরালা’ সম্পর্কেও জানিয়েছেন, রাজ্যের পট পরিবর্তনকারী পদক্ষেপ ক্যারাভান পর্যটন উদ্যোগ অল্প সময়ের মধ্যেই অসাধারণ প্রতিক্রিয়া অর্জন করেছে। তিনি বলেন, “আমাদের এই প্রচেষ্টার ফলে অনাবিষ্কৃত স্থানগুলি যা আমাদের রাজ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কেন্দ্রবিন্দু সেগুলিতে পর্যটকদের ভ্রমণের সুবিধার তৈরি হয়েছে, “।
পর্যটন ডিরেক্টর শ্রী পি বি নুহ বলেছেন, “পর্যটকদের ভ্রমণের সামগ্রিক অভিজ্ঞতা বাড়াতে আমরা কেরালার নতুন প্রকল্পগুলির পাশাপাশি এর মূল সম্পদ যেমন সমুদ্রসৈকত, হিল স্টেশন, হাউসবোট এবং ব্যাকওয়াটার সেগমেন্টও জোর দেওয়ার বিস্তৃত পরিকল্পনা করেছি।”
কেরাভ্যান কেরালা’-এর মতো নতুন পণ্য প্রদর্শনের ফলে দেশীয় পর্যটকদের আগমনের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছিল, এবং এর পরিপূরক হিসাবে ছিল নিখুঁতভাবে তৈরি করা প্রচার এবং বিপণন কৌশল যার মধ্যে কেরালা ট্র্যাভেল মার্টে অংশগ্রহণও অন্তর্ভুক্ত,” এছাড়াও শ্রী পি বি নূহ বলেছেন: “আমাদের পর্যটন প্রচারের নতুন উদ্যোগগুলি পরিবেশগত প্রয়োজনীয়তা এবং স্থায়িত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।”
বিভিন্ন মিডিয়া যেমন প্রিন্ট, টিভি, রেডিও এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলিকেও এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। “আমরা বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের কাছে কেরালাকে সম্পূর্ণ নিরাপদ, আকর্ষক এবং অতিথিপরায়ণ পর্যটনস্থল হিসাবে তুলে ধরার জন্য সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
নভেম্বর মাসে মুম্বাই, পুনে, নাগপুর ও ইন্দোরে এবং ডিসেম্বরের শুরুতে ভুবনেশ্বরে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার B2B পার্টনারশিপ মিটিংয়ে ইন্ডাস্ট্রির কাছ থেকে অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে। অধিক সংখ্যক দর্শকদের কাছে নতুন পণ্যগুলিকে পরিচিত করানোর লক্ষ্যে কেরালা পর্যটন বিভিন্ন বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ এবং B2B রোডশো আয়োজন সহ একাধিক ভ্রমণ বাণিজ্য নেটওয়ার্কিং কার্যক্রমের পরিকল্পনা করেছে।
অভ্যন্তরীণ বিপণন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, কেরালা পর্যটন ডিসেম্বর মাসে ভাদোদরা এবং সুরাটে রোডশোর আয়োজন করবে এবং ওটিএম (আউটবাউন্ড ট্রাভেল মার্কেট) মুম্বাই; সাউথ এশিয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম এক্সচেঞ্জ (SATTE) নতুন দিল্লি; এবং টিটিএফ চেন্নাইয়ের মত বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ করবে।