Spread the love

রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালনে রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি

পারিজাত মোল্লা ,

দেশের প্রথম সারির একজন কৃষিবিজ্ঞানী বা ভারতে ক্ষুদ্র কুটির শিল্প স্থাপন ও প্রসারের জনক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ছিল তাঁর মধ্যে, কিন্তু বিজ্ঞান সাধনা ছেড়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করলেন শান্তিনিকেতন শ্রীনিকেতন গড়ার দক্ষ কারিগর রূপে। বিশ্বকবির স্বপ্নের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতী আর শান্তিনিকেতনের পরিকল্পনা উন্নয়নে মেতে রইলেন কবির একনিষ্ঠ সেবক প্রচার বিমুখ এই মহান ব্যক্তিত্ব। তাঁর হাতে গড়া আর একটি প্রতিষ্ঠান জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি ২৭শে নভেম্বর সন্ধ্যায় শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ ও পালন করলো কৃতীমান পুরুষ রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৩৭ তম জন্মদিন রথীন্দ্রমঞ্চে। এই সন্ধ্যায় সম্মানীয় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বারাসাত কালীকৃষ্ণ গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা অপর্ণা ভট্টাচার্য্য, বিশেষ অতিথি ছিলেন সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির আচার্য্য সত্যম রায়চৌধুরী ও পৌরপিতা রাজেশ সিনহা। সোসাইটির তরফে ছিলেন সভাপতি বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়, সহ-সভাপতি বিচারপতি সৌমিত্র পাল ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। মঞ্চে স্থাপিত কবিগুরু এবং রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শ্রদ্ধা জানান উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা। দিলীপ সেন মহাশয়ের পরিচালনায় উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন সোসাইটির সঙ্গীতশিল্পীরা। স্বাগত ভাষণে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন ১৯৪৭ সালের ১৫ই জানুয়ারি দিনটির কথা, ওইদিন রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির রূপকার ও প্রতিষ্ঠাতা রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরে সোসাইটি রেজিস্ট্রিকৃত হয় ও পথচলা শুরু করে। দীর্ঘ যাত্রাপথ পার করে সোসাইটি আজ বহুধায় বিকশিত হয়েছে প্রতিষ্ঠাতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে। “রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মারক বক্তৃতা”য় শ্রীমতী অপর্ণা ভট্টাচার্য্য রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন ও শান্তিনিকেতন কেন্দ্রিক বিপুল কর্মকাণ্ড নিয়ে বিশদে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, একজন কৃতী বিজ্ঞানী শিক্ষাবিদ তাঁর অধীত বিদ্যাকে কেবলমাত্র শান্তিনিকেতনের বিস্তার ও উন্নতিকল্পে নিয়োজিত রেখেছিলেন, তাঁর আলাদা সত্তা বলে কিছু ছিল না, বিলিয়ে দিয়েছিলেন পিতার কর্মধারার সাথে। বক্তৃতা দেন সোসাইটির সহ-সভাপতি বিচারপতি সৌমিত্র পাল এবং শ্রী সত্যম রায়চৌধুরী মহাশয়। সোসাইটির তরফে প্রতি গুণীজনের হাতে পুষ্পস্তবক স্মারক ইত্যাদি দিয়ে সম্বর্ধনা জানানো হয়। এর পর শুরু হয় ‘পরম্পরা’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক নান্দনিকতায় সমৃদ্ধ পরিবারের সদস্যগণ – কল্যাণ সেন বরাট, ড. কল্পনা সেন বরাট, তনিমা সেন বরাট, কবীর সেন বরাট, কোহিনূর সেন বরাট, কৌস্তভ সেন বরাট ও পৌষালী সেন বরাট – যাঁরা বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলার ধ্রুপদী সঙ্গীত ও নৃত্য জগতে পারিবারিক পরম্পরায় সম্পৃক্ত। নানা ধরণের পরিবেশনার মাধ্যমে তাঁরা মুগ্ধ করে রাখেন উপস্থিত শ্রোতৃদর্শকবৃন্দকে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন শৌভিক শাসমল। শেষ পর্যায়ে সমবেত কণ্ঠে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে শেষ হয় এই দিনের অনুষ্ঠান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *