মালদহ – মুর্শিদাবাদের বন্যার ক্ষতিপূরণ তদন্তে ক্যাগ,

মোল্লা জসিমউদ্দিন
সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে উঠে বন্যায় আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা।সেখানে আদালত এই কেন্দ্রীয় অনুদানে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ক্যাগ তদন্তভারের নির্দেশ দেয়। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ক্যাগ কে এই তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। পাশাপাশি রাজ্য সরকার কে এই ক্যাগ তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছে। মাস খানেক পূর্বে হাইকোর্টের তত্‍কালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের যা পর্যবেক্ষণ ছিল, তার কোনও পরিবর্তন  ঘটেনি  নতুন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে। হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, -‘ মালদহ ও মুর্শিদাবাদের বন্যাত্রাণ দুর্নীতিতে কম্পট্রোলার অফ অডিটর জেনারেল তথা ক্যাগ-ই অডিট করবে’।সোমবার এই মামলার শুনানিতে আদালত জানায়, ‘রাজ্যের ক্যাগ অডিট করবে। তাতে নজরদারি করিবে কেন্দ্রীয় সরকার’। এর আগে ক্যাগকে দিয়ে অডিট করানোর বিরোধিতা করেছিল রাজ্য সরকার । সেই সময়ে মালদহের বন্যাত্রাণে দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের তীব্র ভর্ত্‍সনার মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। সেই মামলার শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডাল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ কার্যত তুলোধনা করে রাজ্যকে।  উল্লেখ্য,  গত ২০১৭ সালে ব্যাপক বন্যা হয়েছিল মালদহে। সেই সময়ে মালদহের একাধিক ব্লকের জন্য জন্য মোট ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। তার মধ্যে একটি  ব্লকের জন্য ১০ কোটি বরাদ্দ হয়েছিল। কথা ছিল, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে স্থানীয় পঞ্চায়েত ক্ষতিপূরণের টাকা দেবে। অভিযোগ, একটি অ্যাকাউন্টে একাধিকবার টাকা পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, কয়েকটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টেই বারবার টাকা ঢুকেছে বলে অভিযোগ। মালদহের হরিশচন্দ্রপুর ও মুর্শিদাবাদের একাধিক জায়গা নিয়েও একই অভিযোগ ওঠে। চলতি বছর জুলাই মাসে কলকাতা হাইকোর্টে  জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। কলকাতা হাইকোর্টের  ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের তত্‍কালীন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে প্রশ্ন করেছিল, -‘সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে’?  তৎকালীন অ্যাডভোকেট জেনারেল জানিয়েছিলেন, -‘শোকজ ও নোটিস জারি করা হয়েছে। কিছু টাকাও উদ্ধার হয়েছে’। তখন প বিচারপতি ফের প্রশ্ন করেন, এটুকুই পদক্ষেপ? একটা পঞ্চায়েতে এই অবস্থা হলে সারা জায়গায় কী হচ্ছে? কোনও গ্রেফতার হয়েছে কি? এই অপরাধে তো ৪০৯ ধারায় যাবজ্জীবন শাস্তি হয়। গত  সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট তলব করে আদালত। যে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তার প্রধান সোনামুখী সাহার বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু হয় আগেই। তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে কলকাতা হাইকোর্ট । এই পুলিশি নিস্ক্রিয়তার ঘটনায় তীব্র অস্বস্তিতে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। এরপর আদালত ওই বন্যাত্রাণের টাকা পয়সার হিসেব খতিয়ে দেখতে ক্যাগকে দিয়ে অডিট করানোর কথা বলে।সোমবার  আদালত নির্দেশ দেয় – এই দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ক্যাগ থাকবে।রাজ্য কে সহযোগিতা করতে হবে।   আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমা করতে হবে ক্যাগ রিপোর্ট ।এখন দেখার ক্যাগ তদন্তে কি উঠে আসে? 

Leave a Reply