Spread the love

মাদ্রাসায় ভুলপ্রশ্ন মামলায় পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ১ নাম্বার দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের 

ওয়াসিম বারি

মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা গেল?  বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের এক নির্দেশ ঘিরে এই প্রশ্নচিহ্নের আবির্ভাব! মাদ্রাসার এসএলএসটি  প্রশ্নপত্রেরও একটি প্রশ্নকে ভুল বলে এদিন রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের সপ্তম তালিকায় থাকা এসএলএসটি -র একটি প্রশ্নকে ভুল বলে রায় ঘোষণা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়।সেই প্রশ্নটি যদি কোনও পরীক্ষার্থী উত্তর  করে থাকেন, তাহলে তিনি সেই প্রশ্নের সম্পূর্ণ নম্বর পাবেন বলে আদেশনামা উল্লেখ রয়েছে । ভুল এই প্রশ্নের নম্বর যোগ করে নতুন করে ফের মেধাতালিকা পুনর্বিন্যাস ও নিয়োগ তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। উল্লেখ্য, এসএলএসটির সপ্তম তালিকায় থাকা নবম প্রশ্নটি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। বিধানসভার ‘জিরো আওয়ার’ সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের চারটি অপশন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যে ৪টি অপশন দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে কোনটিই সঠিক নয় বলে দাবি ওঠে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে। বিষয়টি ঘিরে ধোয়াশা তৈরি হয়। মিজানুর ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থী মামলাও করেন কলকাতা হাইকোর্টে। বিষয়টি ঘিরে আদালতে রাজ্য বিধানসভার সচিব রিপোর্ট জমা দেন। সেই রিপোর্ট প্রশ্নের প্রত্যেকটি অপশনকেই ভুল বলে জানানো হয়।অপশনের কোনটাই সঠিক নয় বলে হাইকোর্টে রিপোর্ট দেন রাজ্য বিধানসভার সচিব। এর পরেই ওই বিতর্কিত প্রশ্নটি উত্তর দিলে সকল পরীক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ নম্বর দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।মামলাকারী পরীক্ষার্থী মিজানুর ইসলামের আইনজীবী  জানিয়েছেন , -‘ কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্ন ভুলের রায়ে উপকৃত হবেন হাজার হাজার পরীক্ষার্থী। ১ নম্বর কম থাকার কারণে যাঁরা মেধাতালিকায় জায়গা পাননি, তাঁরাও এবার সুযোগ পাবেন’। এর পাশাপাশি , নতুন করে মেধাতালিকা পুনর্বিন্যাসের নির্দেশে চরম অস্বস্তিতে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন। তবে হাইকোর্ট মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে সাতদিন সুযোগ দিয়েছে প্রশ্ন ভুল নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে।আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই সময়সীমা রয়েছে । এর মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না করলে, প্রশ্ন ভুলে ১ নম্বর দিয়ে মেধাতালিকা পুনর্বিন্যাস করতে হবে হাইকোর্ট নির্দেশ মেনে।এতে রাজ্যের মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ওই প্রধানশিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া বিপর্যস্ত হতে চলেছে বলে মনে করছে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন। যদিও মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন হাইকোর্ট কে জানিয়েছে, -‘ এখন পরীক্ষার্থীদের নম্বর বাড়ানো হলে অনেকেই শিক্ষকের চাকরি পাওয়ার যোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবেন। এরফলে আবার তাঁদের ইন্টারভিউ নিতে হবে। বসাতে হবে প্যানেল। যার জেরে বিপুল সমস্যায় পড়তে হবে কমিশনকে’। এই বক্তব্য জানার পর কলকাতা হাইকোর্ট  মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে ৭ দিন সময় দিয়েছে। এবং একই সঙ্গে জানিয়েছে, ২১ ডিসেম্বরের  মধ্যেই কমিশনকে ঠিক করে নিতে হবে, কী ভাবে এই বাড়তি নম্বর দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবেন কমিশন কর্তৃপক্ষ। এই ভুল প্রশ্নের মামলাটি প্রকাশ্যে আসে মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক পদের আবেদনকারী মিজানুর ইসলামের করা একটি মামলার জন্য। সপ্তম এসএলএসটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পরও তাঁকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়নি। কাট অফ মার্কস ছিল ৬১। মামলাকারী পেয়েছিলেন ৬০.৫ হাইকোর্ট কে তিনি জানান, একটি প্রশ্নের উত্তরের বিকল্প ভুল ছিল। তাই তাঁর বাড়তি নম্বর পাওয়া উচিত। গত ২৮ জুলাই মিজানুরের হয়ে ওই মামলা করেন আইনজীবী আলি এহসান আলমগীর এবং রাবিয়া খাতুন।২০২০ সালের ৩ মার্চ  মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন ১২১টি পদে প্রধানশিক্ষক/শিক্ষিকা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি লিখিত পরীক্ষা হয়। এরফল প্রকাশিত হয় ওই বছর ১১ অগস্ট তারিখে।এখন দেখার মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন কি করে কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ ঘিরে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *