Spread the love

বর্তমান শিক্ষার মান নিয়ে সন্দীহান প্রকাশ আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর শিক্ষা-উপদেষ্টার

শিক্ষানীতি যাঁরা তৈরি করছেন তাঁরা শিক্ষা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাই শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, পুরো দেশের শিক্ষার পরিস্থিতিই ভয়াবহ বলে মত প্রকাশ করলেন আদিত্য বিড়লা ম্যানেজমেন্ট কর্পোরেশনের শিক্ষা-উপদেষ্টা ডঃ শ্যামলাল গঙ্গোপাধ্যায়। শ্যামলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের শিক্ষা দেরাদুনে। সেখানে থাকার সময়ই মাত্র ১৫ বছরে সিনিয়র কেমব্রিজ হিসেবে তিনি শিক্ষাজগতের সঙ্গে পেশাদার হিসেবে যুক্ত হন।

তিনি মনে করেন, পাঠ্যপুস্তক আরও আকর্ষণীয় হতে হবে, আরও অনেক ঝকঝকে হতে হবে। আমাদের দেশে এখনও ঝকঝকে বই পাওয়া যায় কিন্তু তার বদলে ছাত্রছাত্রীদের পড়তে হয় আকর্ষণহীন সাদামাটা পাঠ্যপুস্তক। এক্ষেত্রে স্কুলগুলির কিছু করারও থাকে না। স্কুলগুলিকেও অনেক কিছু করতে হয় তারা না চাইলেও।

শ্যামলাল গঙ্গোপাধ্যায় কাজ করেছেন শিল্পপতি বিকে বিড়লার কণিষ্ঠা কন্যা তথা কেসোরাম ইন্ডাস্ট্রির ভূতপূর্ব চেয়ারপার্সন প্রয়াত মঞ্জুশ্রী খৈতানের সঙ্গে। পূর্ব অভিজ্ঞতার জেরেই বিড়লা গ্রুপের চেয়ারম্যান কুমারমঙ্গলম বিড়লা তাঁকে শিক্ষা-উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন গঙ্গোপাধ্যায়।

আমাদের দেশে শিক্ষার পুরনো পদ্ধতি যথেষ্ঠ ভালো ছিল। তাই শিক্ষার ধারা এগিয়ে যাওয়ার প্রকৃত সদিচ্ছা থাকলে নীতি নির্ধারকদের সেই নীতির ভিত্তিতেই নতুন কিছু করতে হত। “এখানে স্কুল-কলেজগুলির কোনও স্বাধীনতা নেই। পাঠ্যসূচি থাকবেই, কিন্তু যা কিছু করতে হবে সবই এনসিইআরটির পাঠ্যপুস্তক অনুসরণ করেই, এমন কেন হবে?” প্রশ্ন তুলেছেন শ্যামলাল গঙ্গোপাধ্যায়।

আগে পাসের হার ছিল কম, কিন্তু পাস করা ছাত্রছাত্রীরা সরাসরি ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সুযোগ পেতেন। এখন পাসের হার বেড়েছে এদিকে শিক্ষা শেষ করে কেউ চাকরি পাচ্ছে না। কেন, সেই উত্তরও তিনিই দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি গত এক সপ্তাহে ৫০ জন চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ নিয়েছি। তাঁদের মধ্যে ফার্স্ট ক্লাস, গোল্ড মেডালিস্টও আছেন। তাঁরা কোনও প্রশ্নের উত্তরই দিতে পারছেন না। আমি ইংরেজিতে উত্তর দেওয়ার কথা বলছি না, তাঁরা যে বিষয় নিয়ে স্পেশালাইজেশন করেছেন, সেই বিষয়টি সম্পর্কেই গভীরতা নেই। জানি না আমার কথা বিশ্বাস করতে পারবেন কিনা।” তাঁর কথায়, এখন এক-দেড় লাখ টাকা খরচ করলেই একটা মানপত্র পাওয়া যায় যেটায় পিএইচডি ডিগ্রির কথা লেখা থাকে। আমি যখন পিএইচডি করেছিলাম তখন এই পরিস্থিতি ছিল না।

অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাসফেল না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শিক্ষা ও সাক্ষরতার মধ্যে পার্থক্য আছে। আমি বুঝতে পারছি না আমরা কোন পথে যাচ্ছি। আমরা কি শিক্ষাকে শেষ করে দিতে চাইছি? গ্রামের দিকে আড়াই-তিন বছরের বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতে হয় না। বাড়িতেই প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়।” তাছাড়া জুনিয়র কলেজের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। স্কুল ও কলেজের মাঝে এই স্তর প্রয়োজন বলে তিনি জানান। মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্যে এই সুবিধা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *