ফেক ভিডিওতে হায়নার হামলা, ‘নাটের গুরু’দের খুঁজছে পূর্ব বর্ধমান সাইবার ক্রাইম
মোল্লা জসিমউদ্দিন , মঙ্গলকোট,
যে কোন হিংসা, কিংবা আতঙ্ক ছড়াতে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করার অভিযোগ বারবার উঠে।ঠিক এইরকম এক ‘ফেক ভিডিও’ ঘিরে তোলপাড় পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদের একাংশ এলাকা। এই ঘটনার সুত্রপাত এই তিন জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় থাকা কেতুগ্রাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক মহিলার কোলে শুয়ে কাঁদছে এক কিশোর । তার বাম পায়ের হাঁটুর প্রায় নিচের অংশ নেই । রক্তাক্ত কিশোরের পায়ের হাড় বেরিয়ে আছে । মাংস খোবলানো । এই ভিডিও ছবিতে লেখা ‘কেতুগ্রাম থানার কেউগুরি মাঠে একটি হায়না বাঘের হামলায় একটা ছোট্ট বাচ্ছা ছেলে’ । শুধু তাই নয়,কয়েকটি ভিডিওতে রয়েছে অর্ধমৃত ও মৃত হায়নার ছবি ।যেন হলিউড সিনেমার কোন ভৌতিক ছবি।একটি ভিডিও দেখে মনে হচ্ছে একটি জখম হায়না জোরে জোরে শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছে ভ্যানের উপর রাখা গাড়িতে । শোনা যাচ্ছে তার শ্বাস নেওয়ার শব্দ । তার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে পশুর হাড় হিম করা গোঁগানি । গত সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো এই ভূয়ো খবরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদের একাংশ এলাকায় । বিষয়টি নজরে পড়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ ।সাধারণ মানুষের আতঙ্ক কাটাতে জেলাপুলিশ সোশ্যাল মিডিয়াকেই মাধ্যম করেছে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য । চলছে সচেতনতামূলক প্রচার ।পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের তরফ থেকে ওই সমস্ত ছবি ও ভিডিও আপলোড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখা হয়েছে, ‘বিগত কয়েকদিন ধরে কিছু অসাধু ব্যক্তি সামাজিক মাধ্যমেগুলির অপব্যবহার করে নিচে দেওয়া ভিডিও গুলির মত বিভিন্ন ফেক্ ভিডিও ও মিথ্যা খবর সাধারণ মানুষের মধ্যে পরিবেশন করে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আপনাদের জানান যাচ্ছে যে এই ধরনের খবরগুলি সম্পূর্ন মিথ্যা। আপনারা কেউ এই ধরণের খবর দেখে আতঙ্কিত হবেন না। যারা এই অসাধু কাজ করে চলেছেন তাদের সনাক্তকরণ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তাই আপনারা এই ধরণের মিথ্যা খবর পরিবেশন করা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।’পুলিশ সুত্রে।প্রকাশ ,শুধু সচেতনতামূলক প্রচারই নয়, ইতিমধ্যেই ওই ভূয়ো পোস্টের উত্স সন্ধানে নেমে পড়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার সাইবার ক্রাইম বিভাগ । ওই পোস্টের পিছনে যে বা যাদের হাত আছে খুব দ্রুত তারা ধরা পড়বে বলে আশা পুলিশের । ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট করা ব্যক্তিদের একাউন্ট পরীক্ষা করে খুব তাড়াতাড়ি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে।তবে তাতে যেন কেউ অযথা আতঙ্কিত না হয়,কেননা পুলিশ এই ফেক ভিডিও পোস্টকারীদের আসল ব্যক্তিদের সন্ধানে তৎপর।