পথ-শিশুদের হাতে নতুন পোশাক তুলে দিলেন মা-মেয়ে জুটি,
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
শুধু কলকাতা শহর নয় এই দেশের বিভিন্ন ছোট বড় শহরে, স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ওদের এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াতে দ্যাখা যায়। ওদের নির্দিষ্ট কোনো পরিচয় নাই, ওরা পথশিশু। মাথার উপর ছাউনি নাই। বিশাল পৃথিবী ওদের বাসস্হান। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা - কার্যত খোলা আকাশের নীচে ওদের জীবন কাটে। সরকার আসে যায়, কিন্তু ওদের কথা কেউ ভাবেনা। দু'বেলা পেট ভরে দু'মুঠো খাবার ওদের জোটেনা। তার মাঝে ওদেরও শখ হয় আর পাঁচ জন শিশুর মত পুজোর সময় নতুন পোশাক পড়ে আনন্দ করতে। এই 'শখ'-এর ভাবনাটাই ওদের কাছে চরম বিলাসিতা। কে দেবে ওদের নতুন পোশাক?
কিন্তু ওরা তো জানতনা ওদের জন্য আছে মা-মেয়ে জুটি - নরেন্দ্রপুরের রত্না ‘মারিনা’ ঘোষ এবং এযুগের অত্যন্ত জনপ্রিয় চলচ্চিত্র, সিরিয়াল ও যাত্রা শিল্পী তথা সুপরিচিত সঙ্গীত শিল্পী রেশমা ঘোষের ‘গ্রেস এণ্ড গ্লোরি অব গড’ চ্যারিটেবল সোসাইটি। মূলত তাদের জন্যই ২৬ শে সেপ্টেম্বর বালিগঞ্জ ও তালাদি রেল সেটশন সংলগ্ন এলাকা এবং পার্কসার্কাস, তপসিয়া, ট্যাংরা সহ কলকাতার বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুই শতাধিক শিশু ও মহিলা পায় নতুন পোশাক। লক্ষ্য পুজোর আগেই আরও কিছু পথ শিশু ও অসহায় মহিলার হাতে নতুন পোশাক তুলে দেওয়া।
মাদার টেরিজার স্নেহধন্যা রত্না ‘মারিনা’ ঘোষ মানুষের সেবার লক্ষ্যে গড়ে তোলেন ‘গ্রেস এণ্ড গ্লোরি অব গড’ চ্যারিটেবল সোসাইটি। মায়ের আদর্শে বেড়ে ওঠা রেশমাও তার আয়ের একটা বড় অংশ মানুষের সেবার কাজেই বিলিয়ে দেন। পরে অনেক সহৃদয় ব্যক্তিরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। ফলে তাদের পক্ষে সুখে দুঃখে বারবার অসহায় মানুষের পাশে থাকা সম্ভব হচ্ছে।
রেশমা দেবী বলেন- প্রয়োজন অনেক। সাধ থাকলেও সাধ্য কম। তার মাঝেও মা ও মেয়ের সীমিত সম্বল এবং সহৃদয় মানুষের সহযোগিতায় অসহায় মানুষের পাশে থাকার সুযোগ পাচ্ছি । যখন রঙিন আলো ও হাজার হাজার মানুষের হাততালির সামনে স্টেজ পারফরম্যান্স করি তখন তার অনুভূতি একরকম। কিন্তু খোলা আকাশের নীচে যখন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় তখন এক স্বর্গীয় আনন্দ লাভ করি। মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। এ এক অন্য অনুভূতি। যেভাবে সহৃদয় মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাতে আমরা সবার কাছে কৃতজ্ঞ।