“ধর্ষণ – খুনে আমি জড়িত নই”, চার্জ গঠনের দিন বিস্ফোরক সঞ্জয়
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
সোমবার দুপুরে শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের মামলায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় কে। এদিন চারদিকে ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। তার মাঝেই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে আসা হয় ধৃত সিভিককে।সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ ধর্ষণ এবং খুনের একাধিক ধারায় ধৃত সিভিকের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ঘটনার ৮৭ দিন এবং সিবিআইয়ের চার্জশিট পেশের ২৮ দিনের মাথায় ওই মামলায় চার্জ গঠন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে । এরপর শুরু হবে বিচারপ্রক্রিয়া। আদালতে জানানো হয়েছে, আগামী ১১ নভেম্বর থেকে ওই মামলায় শুনানি শুরু হতে চলেছে। প্রাত্যহিক শুনানি চলবে । আদালত সূত্রে প্রকাশ বিচারকের সামনেও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন আরজি কর হাসপাতালের ধর্ষণ-খুনকাণ্ডে একমাত্র অভিযু্ক্ত ধৃত ওই সিভিক।আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়রের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হল। প্রায় তিন মাস পরে আরজি কর খুন – ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়র এদিন সাংবাদিকদের সামনে চিৎকার করে বললেন, -”আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে আমাকে ডিপার্টমেন্ট চুপ থাকতে বলেছে।” উল্লেখ্য, সোমবার আরজি কর মামলায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়রের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের ধারায় গঠিত হয় চার্জ। আগামী ১১ নভেম্বর থেকে রোজ শুনানি হবে। আরজি কর খুন ও ধর্ষণের মামলায় শিয়ালদহ আদালতে রুদ্ধদ্বার কক্ষে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া হয়। শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত -১ বিচারকের এজলাসে ধৃতের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ধৃত সিভিক ভলান্টিয়রের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ (খুন), ৬৪(১) ধর্ষণ এবং ৬৬ ধারায় চার্জশিট দিয়েছিল। সূত্রে জানা গেছে , বিচারকের সামনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়র।শিয়ালদহ আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় যখন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়রকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়, তখন তিনি সাংবাদিকদের দেখে কিছু বলতে চান। এর আগে সেভাবে ধৃতকে মুখ খুলতে দেখা যায়নি সাংবাদিকদের সামনে। গ্রেফতারির পর থেকেই একপ্রকার নিরুত্তাপ, নিস্পৃহ থাকতে দেখা গিয়েছে ধৃতকে। গ্রেফতারির পর একেবারে অবলীলায় ধৃত বলেছিল, ‘আমিই দোষী, আমাতে ফাঁসি দিন।’ কিন্তু তারপর শুনানির সময়ে বিচারককে বলেছিলেন, ‘স্যর আমার কিছু বলার রয়েছে। নয়তো দোষী করে দেবে।’ তারপর একবার আদালতকক্ষ থেকে বেরনোর সময়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমি কিছু করিনি।’ এদিন যখন চার্জ গঠন করা হল তাঁর বিরুদ্ধে, তখন বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তিনি। বললেন, ‘সরকার আমাকে ফাঁসাচ্ছে। আমি রেপ মার্ডার করিনি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ডিপার্টমেন্ট আমাকে চুপ থাকতে বলেছিল।’তবে কার কথা বলতে চাইছেন ধৃত সিভিক? মঙ্গলবার যখন সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি, ঠিক তার আগেই ধৃতের এহেন মন্তব্য একাধিক প্রশ্ন তুলে দিল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল। ঘটনার ৫৫ দিন পর সিবিআই যে চার্জশিট দিয়েছিল, তাতেও ধর্ষণ খুনে অন্যতম একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়রেরই নাম রয়েছে।১১ টি প্রমাণ দেখানো হয়েছে দাখিল চার্জশিটে। কিন্তু ধৃতের এদিনের মন্তব্যে উঠে এল একাধিক প্রশ্ন।আগামী ১১ নভেম্বর শুরু হচ্ছে রোজ শুনানি পর্ব।