সেখ সামসুদ্দিনঃ ফেডারেশন অফ ওয়েষ্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস আসোসিয়েশনের ডাকে হুগলী জেলা কমিটির নেতৃত্বে ট্রাক নিয়ে মহামিছিল ডানকুনি ট্রোলপ্লাজা থেকে বধমান উল্লাস বাসস্ট্যান্ড হয়ে জেলাশাসকের মারফত মূখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্যে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। “বহু দেরিতে হলেও সরকার গত ৩০ জুলাই ওভারলোড বন্ধের নোটিফিকেশন করেছেন। যে প্রথমেই কুড়ি হাজার টাকা ও টন প্রতি ২০০০ টাকা এইভাবে তিনবার ফাইন করার পর ট্রাকের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের সিদ্ধান্তকে ফেডারেশন স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু শুধু দশগুণ ফাইন আইন-বিধিতে ওভারলোড বন্ধ হবে না। এখনো পর্যন্ত কিছু অসাধু এম.ভি.আই/ট্রাফিক পুলিশ/থানা/ডাক পাটী/প্যাড পার্টি/লোকেশন পার্টী দিয়েই প্রচুর টাকার বিনিময় ওভারলোড চলছে। আমরা এই রেজিস্ট্রেশন বাতিলের ভয়ে আমরা ৬০% ট্রাক মালিক নিজেদের আরএলডব্লু অনুযায়ী লোড করছি, ৪০% অসাধু ট্রাকমালিক বড় বড় কোম্পানী মার্কা দিয়ে অসাধু উপায়ে ওভারলোড চালাচ্ছে। সেইকারনেই আমরা মূখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছি যে লোডিং পয়েন্ট থেকে ওভারলোড বন্ধ করতে হবে। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে তবেই ওভারলোড বন্ধ হবে, নচেৎ কোনদিন সম্ভব নয় । সরকার এক রকম বলবে আর শুধু টাকা তুলবে চলতে পারে না। আমরা ৭০% গাড়ি মালিক যারা সরকারের নির্দেশ মেনে চলার চেষ্টা করছি তারা শেষ হয়ে যাব, পরিবহন শিল্প পশ্চিমবঙ্গে ধ্বংস হয়ে যাবে। সারা ভারতবর্ষে ৬ আগষ্ট থেকে এক্সেল লোড ২৫ শতাংশ বেড়ে ছিল। অন্যান্য রাজ্যেও এক্সেল লোড বেড়ে গিয়েছিল। শুধু আমাদের রাজ্যের ট্রাক মালিকরা তাতে বঞ্চিত ছিলাম। খুশির খবর সরকার ২৫ % এক্সেল লোড ২রা আগষ্ট আমাদের রাজ্যে চালু হল। দুই মাসের মধ্যে সমস্ত জায়গায় এক্সেল লোড বেড়ে যাবে। আমরা এক্সেল লোড চালু করে ওভারলোড বন্ধ করতে চাই। বেঙ্গল পারমিট বহু গাড়ীর মালিক কোভিড ১৯ এর জন্য ও ব্যবসা মন্দা আর এই ওভারলোডের জন্য গাড়ি বন্ধ রেখেছে ঠিকমতন ট্যাক্স দিতে পারেনি, ট্যাক্স না দিলে এক্সেল লোড চালু করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় বহু গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ওভারলোড চলতে সাহায্য করে কিছু অসাধু পুলিশ/ট্রাফিক পুলিশ/সিভিক ভলেন্টিয়ার/ডাকপাটির জুলুম অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। আর উভয় পক্ষকে ফাইন ও আইন করে শাস্তি দিতে হবে। যে খাদান মালিক ট্রাকে ওভারলোড দিচ্ছে আর যে ড্রাইভার ওভারলোড নিয়ে যাচ্ছে দুজনের ই ফাইন/শাস্তি চাই। নচেৎ আমাদেরই এই ব্যবসা থেকে সরে যেতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে পরিবহন শিল্প শেষ হয়ে যাবে আমরা আশাবাদী তাই মাননীয়া মূখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইছি। আমাদের দাবি (১) লোডিং পয়েন্ট থেকে ওভারলোড বন্ধ করতে হবে। (২) পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, সিভিক ভলেন্টিয়ার ,ডাকপাটী, এমভিআই ও অন্যান্য প্রশাসনের এক অংশের জুলুম অত্যাচার ট্রাকের উপর বন্ধ করতে হবে। (৩) বহু গাড়ি মালিক ট্যাক্স দিতে পারেনি, তাদের ট্যাক্স মুকুব করে এক্সেল লোড চালু করতে হবে” বলে জানান ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীর চ্যাটার্জী। এই সকল দাবিতে ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় ডানকুনি টোল প্লাজা থেকে বর্ধমান বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত ট্রাক নিয়ে মালিকরা সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রচারে ওভারলোড বন্ধ ও মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মিছিল করে। তারপর পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসকের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ডেপুটেশন দেয় বৃহস্পতিবার হুগলি ইউনাইটেড ট্রাক ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। তাদের অভিযোগ পুলিশ, এম ভি আই, ডাকপার্টির অত্যাচারে বহু ট্রাক মালিক ট্রাক চালানো বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের জোর করে ওভারলোড করাতে বাধ্য করছে এই সকল দপ্তরের কর্মীরা। সম্প্রতি আমাদের রাজ্যে এক্সেল লোড বৃদ্ধি পেয়েছে। অভিযোগ তার পরেও কিছু আসাধু পুলিশকর্মী ও পুলিশের ডাকপার্টি জোর করে ট্রাক ড্রাইভারদের ওভারলোড করতে বাধ্য করছে। ওভারলোড না করলে তাদের বিভিন্ন অজুহাতে অত্যাধিক হারে ফাইন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই বিষয় নিয়ে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রীকেও জানিয়েছে ট্রাক মালিকরা। কিন্তু তাতে সমস্যা মেটেনি। তারা চাইছে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি হস্তক্ষেপ করুক বিষয়টিতে। মুখ্যমন্ত্রী ভোটের আগে বলেছিলেন আমি ২৯৪টি আসনে আমি প্রার্থী, আমাকে ভোট দিন। আমরা ওনাকে ভোট দিয়েছিলাম। কিন্তু উনি আমাদের জন্য কিছু করেননি বলে অভিযোগ করেন ট্রাক মালিকরা। তারা চাইছেন লোডিং পয়েন্ট থেকে আন্ডার লোড করে গাড়ি বার করা হোক। মুখ্যমন্ত্রী চাইলে একদিনের মধ্যে এই অত্যাচার বন্ধ করতে পারেন। কিন্তু তিনি করছেন না। ট্রাক মালিকদের দাবি অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করুক এবং ট্রাক ড্রাইভারদের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিক বলে জানান রাজ্য কমিটির সদস্য ও হুগলী ইউনাইটেড ট্রাক ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের
রসিদ সরদার এবং ফেডারেশন অফ ওয়েষ্টবেঙ্গল ট্রাক অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সজল ঘোষ।