Spread the love

গোধূলীর আবিরে লাবণ্য – এক অসাধারণ স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি,

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

গান, স্পেশাল এফেক্ট, বিদেশী লোকেশন ইত্যাদি ছাড়াও যে ১ ঘণ্টা ২ মিনিট ২০ সেকেন্ডের একটা স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ব্যস্ত  মানুষের চিত্তে দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে তার জ্বলন্ত প্রমাণ 'গোধূলীর আবিরে লাবণ্য'। ইতিমধ্যেই দর্শক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে - লাবণ্যকে কি না ফেরার দেশে পাঠালে হতোনা? অনেকের বক্তব্য - আর একটু টানলে ক্ষতি কি ছিল? এইসব টুকরো টুকরো মন্তব্য থেকেই বোঝা যায় চলচ্চিত্রটি দর্শক মনে কতটা প্রভাব ফেলেছে।

আজ তবে এইটুকু থাক - কবির সঙ্গে পাঠিকার, অথবা উল্টোটা বলা যেতে পারে, এভাবেই শুরু হয় প্রেম। যুগ যুগ ধরে বারবার দ্যাখা যায় পাঠিকা কবিতার মধ্য দিয়ে তার প্রিয় কবির প্রেমে পড়েছে। ধীরে ধীরে প্রেম পরিণত হয়েছে ভালবাসায় এবং  বেড়েছে গভীরতা। নিজের অজান্তেই 'আপনি' থেকে 'তুমি' হতে বেশি সময় লাগেনা। তাইতো লাবণ্যের মুখ দিয়ে অক্লেশে বেড়িয়ে আসে 'সাগরের বুকে নদীর জল মিশবে'। এদিকে পাশের বাড়ির হুলো বনাম এবাড়ির মিনি - গভীর তাৎপর্য বহন করে। গোধূলী ও আবিরের সাদামাটা পরিচিত জীবনে লাবণ্যের স্বল্প উপস্থিতি তাদের জীবনে অন্য মাত্রা এনে দেয়। বিশেষ করে 'শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে লকডাউন' হওয়া আবিরের টানাপোড়েন ছিল দেখবার মত। শেষ দৃশ্যে ডাক্তার যখন লাবণ্যের চিরবিদায়ের কথা শোনাচ্ছেন তখন গোধূলীর প্রতিক্রিয়া ছিল অসাধারণ - মেয়েরা সব ছাড়তে পারে কিন্তু স্বামীকে নয়। 

মোটামুটি এই ছিল কাহিনী। চলচ্চিত্রের নামটাও চমৎকার – গোধূলীর আবিরে লাবণ্য। গোধূলির সময় আবির রাঙা পশ্চিম আকাশে যে অসাধারণ লাবণ্য ছড়িয়ে পড়ে তার সাক্ষী এই চলচ্চিত্র। পুরো আনন্দ উপভোগ করতে হলে যেতে হবে ইউটিউবে।

   যাত্রা জগতের সুপরিচিত মুখ দিবাকর দে, যিনি নবাব নামে পরিচিত, হলেন এই চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্র। ছিলেন যাত্রা ও সিরিয়াল জগতের দুই পরিচিত মুখ রীতা ভট্টাচার্য ও সুব্রতা হালদার। প্রত্যেকের অসাধারণ অভিনয় গোটা চলচ্চিত্রটিকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। গোধূলী ও আবির রূপী রীতা ও নবাবের ন্যাচারাল অভিনয় ছিল আকর্ষণীয়। স্বল্প উপস্থিতির মধ্যেও সুব্রতা প্রমাণ করে দেয় অভিনয় ক্ষমতা থাকলে quantity নয় quality টাই আসল।

  নবাব বাবু বললেন - দীর্ঘদিন অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত আছি। ইচ্ছে ছিল একটা চলচ্চিত্র করার। আর্থিক সঙ্কটের জন্য সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ, রীতা ও সুব্রতাদের আন্তরিক সহযোগিতা ও মনপ্রাণ ঢেলে অভিনয় আমার স্বপ্নকে পূরণ করে। ওদের অসংখ্য অভিনন্দন ও ধন্যবাদ। 

   সুব্রতা দেবী বললেন - নবাবদার ডাক উপেক্ষা করা সম্ভব ছিলনা। গল্পটাও ছিল চমৎকার। আশাকরি প্রত্যেকের ভাল লাগবে। তিনি দর্শকদের বইটি দ্যাখার জন্য অনুরোধ করেন। একই আবেদন রাখেন রীতা দেবী। তিনি যে একজন জাত শিল্পী তার প্রমাণ এখানে পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *