গুসকরা ছন্নছাড়া ক্লাবের কালী পুজোর উদ্বোধনে পুলিশ সুপার
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
একদল ছন্নছাড়া যুবকের হাত ধরে গুসকরা 'ছন্নছাড়া' ক্লাবের যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই ১৯৭২ সালে, বাংলার স্মরণীয় উত্তাল রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে। প্রতিকূল পরিস্থিতি অতিক্রম করে দেখতে দেখতে পঞ্চাশ বছর অতিক্রম করে একান্ন বছরে পা-দিল 'ছন্নছাড়া' ক্লাব পরিচালিত কালী পুজো। কিন্তু আজও তারা ধরে রেখেছে তাদের অতীত ঐতিহ্য।
২৪ শে অক্টোবর ফিতে কেটে মণ্ডপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন। তাকে সহযোগিতা করেন পুরসভার চেয়ারম্যান তথা ক্লাব সম্পাদক কুশল মুখার্জ্জী। তখন উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহরায়, ডিএসপি (ডি এণ্ড টি) বীরেন্দ্র কুমার পাঠক, আউসগ্রাম থানার আইসি আব্দুল রব খান, গুসকরা বীট হাউসের ওসি নীতু সিং ও ছোড়া বীট হাউসের ওসি পঙ্কজ নস্কর, আউসগ্রাম ১ নং সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অরিন্দম মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট সমাজসেবী সেখ সালেক রহমান, পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বেলী বেগম সহ অন্যান্য কাউন্সিলাররা এবং শহরের বেশ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ক্লাবের সদস্যরা এবং তৃণমূল শহর সভাপতি দেবব্রত শ্যাম ও যুব সভাপতি কার্তিক পাঁজা।
এর আগে ক্লাবের পক্ষ থেকে কপালে চন্দনের টিপ, গলায় উত্তরীয় পড়িয়ে ও হাতে
এই অঞ্চলের বিখ্যাত ডোকরা শিল্পীদের তৈরি মেমেণ্টো তুলে দিয়ে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বরণ করে নেওয়া হয়।
একটা সময় আলোক সজ্জায় অভিনবত্ব এনে এলাকায় বিশেষ পরিচিতি লাভ করে ছন্নছাড়া ক্লাব। কালের বিবর্তনে সেই পথ ত্যাগ করে আজ আলোক সজ্জার পরিবর্তে মণ্ডপ সজ্জায় তারা নিয়ে এসেছে অভিনবত্ব। আমাদের তথাকথিত আধুনিক সমাজে হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন মানবিক গুণাবলী যথা বিবেক, মনুষ্যত্ব, ত্যাগ, সহিষ্ণুতা, লৌকিকতা, লজ্জা, সংযম প্রমুখের সন্ধানে 'ছন্নছাড়া' ক্লাব ব্যস্ত। আজ সে খুঁজে চলেছে ছেলেবেলার হারিয়ে যাওয়া আনন্দ ও খেলাকে যা নিয়েই গড়ে ওঠে শিশুর শৈশব। পুজোর মণ্ডপ সজ্জায় সেইসব বার্তা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। মণ্ডপ সজ্জা দেখে প্রতিটি পুলিশ আধিকারিক নস্টালজিক হয়ে পড়েন। তারাও খোঁজার চেষ্টা করেন 'ফেলা আসা ছেলেবেলার' আনন্দমুখর দিনগুলি।
ক্লাব সূত্রে জানা যাচ্ছে অন্যান্য বছরের মত এবছরেও আগামী কয়েকদিন দুপুরে অঙ্কন, আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নৃত্যের মত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা থাকছে। আর থাকছে কুইজ ও শ্রুতি নাটক। সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ, মীরাক্কেল খ্যাত উৎপল ঘোষ তার হাসির 'খাজানা' নিয়ে উপস্থিত থাকছেন।
সংক্ষিপ্ত ভাষণে পুলিশ সুপার শান্তিপূর্ণ ভাবে পুজো উপভোগ করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন। একইসঙ্গে সম্ভাব্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
অন্যদিকে ক্লাব সম্পাদক বলেন - গত পঞ্চাশ বছর ধরে আমরা এই পুজোর আয়োজন করে চলেছি। আশাকরি এই বছরও অতীত ঐতিহ্য বজায় থাকবে। তিনিও আসন্ন ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে আগত দর্শনার্থীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।