কয়লা কান্ডে অভিষেকের আপ্তসহায়কের ছয় সপ্তাহের আইনী রক্ষাকবচ,
মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু ,
কয়লা পাচার মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর আপ্ত সহায়কের মিললো ছয় সপ্তাহের আইনী রক্ষাকবচ। এই সময়সীমার মধ্যে গ্রেপ্তার করা যাবেনা। তবে আগামী সোমবার কয়লা পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল পিটিশন দাখিল করতে পারে বলে জানা গেছে। কয়লা পাচার মামলায় ইতিমধ্যেই ইডি বেশ কয়েকবার তলব করেছিল রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক কে।তিনি দুবার জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে গেলেও অবশেষে তৃতীয়বার তলব করার পর দিল্লিতে ইডি-র দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। কয়লা-কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাঁকে। আইনমন্ত্রীর বয়ান রেকর্ড করেছেন ইডি-র আধিকারিকরা।কয়লাকাণ্ডে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ডহারবার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। দিল্লির জামনগর হাউজে ইডির অফিসে তিনি হাজিরা দিয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী রুজিরাকেও একই মামলায় সমন পাঠানো হয়। রুজিরা হাজিরা না দিলেও ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিষেক। টানা ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ চলে তাঁর। পরে ফের তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। যদিও দ্বিতীয়বার হাজিরা দেননি তিনি।এরপরই ইডি-র সমনে স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক। তাঁর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন সুপ্রিম কোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। তবে, কয়লা-কাণ্ডে অবশেষে স্বস্তি পেয়েছেন অভিষেক বন্দ্যপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশে স্বস্তি পেয়েছেন অভিষেক-জায়া। তাঁকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হয়নি। কয়লা দুর্নীতি মামলায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর পাতিয়ালা হাউস কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রুজিরা দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে থাকেন।এরই মধ্যে এই কয়লা পাচারকাণ্ডে এবার অনুপ মাজি ওরফে লালার হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে জারি হয়েছে ওয়ারেন্ট। এই ঘটনায় অপর অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধেও জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে দিল্লির পাতিয়ালা হাউজ আদালত। ইতিমধ্যেই চার বার বিনয় মিশ্র কে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। তবে চারবারই সেই হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন বিনয়। জানিয়েছেন, তিনি এখন দেশের বাইরে। এমনকী তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য, এখন আর ভারত নয়, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্র ভানুয়াটুরের বাসিন্দা বিনয় মিশ্র।কয়লা ও গরু পাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফের তদন্তে নামে ইডি। কলকাতা ও হুগলির একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় তারা। তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে নজরদারি চলে ইডির দিল্লি দফতর থেকে। রাজ্যের উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জ্ঞানবন্ত সিং-কেও এই মামলায় ইতিমধ্যে তলব করা হয়েছিল দিল্লিতে।এরই মধ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়কের গ্রেফতারির আশঙ্কা তৈরি হয়। কলকাতা হাইকোর্টের ছয় সপ্তাহের রক্ষাকবচ মেলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর আপ্ত সহায়ক সুমিত রায়ের। তবে আদালত স্পষ্ট করে দেয়, সুমিতকে এখনই গ্রেফতারি করা যাবে না।তবে আগামী সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল পিটিশন দাখিল করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি।উল্লেখ্য, বাংলাতে গরু পাচারের পাশাপাশি কয়লা পাচার মামলায় জোর কদমে তদন্ত চালাচ্ছে একযোগে সিবিআই ও ইডি।