আরজিকর হাসপাতালে দুর্নীতির টাকা সন্দীপের ফিক্সড ডিপোজিটে? খতিয়ে দেখতে চাইছে সিবিআই
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে আরজিকর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ব্যাঙ্ক বিষয়ক মামলার শুনানি চলে। এদিন আরও বিড়ম্বনা বাড়ল আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের। ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙতে গিয়ে নতুন ঝামেলায় সন্দীপ ঘোষ। বুধবার হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই একটি রিপোর্ট দিয়েছে। আর তাতেই অস্বস্তি বাড়ার আশঙ্কা আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন এই অধ্যক্ষের।আরজি করের দুর্নীতির টাকাতেই সন্দীপ ঘোষ চারটি ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন কিনা? তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়ে দিল সিবিআই। এই ফিক্সড ডিপোজিট গুলি ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে। অন্য দিকে হাইকোর্টের নির্দেশে ঠিক এই সময়েই আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।২০২১ সাল থেকে হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে। সেই সব দুর্নীতির সময় সন্দীপ ঘোষ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদে ছিলেন।এর ফলে তার নামও জড়িতে যাচ্ছে। সেই দুর্নীতিতে অন্যতম মুখ সন্দীপ ঘোষ। সেই অভিযোগও সামনে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে গোটা সময়টা ধরেই দুর্নীতির তদন্ত চলছে।এমনকী আর্থিক দুর্নীতির হদিশ পেতে আরেক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডিও তদন্ত শুরু করেছে।এর ফলে এখনই এই টাকা তুলতে দিলে দুর্নীতির তদন্তের ক্ষতির আশঙ্কার ইঙ্গিত দিয়েছে সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের আদালত সিবিআই ওই রিপোর্ট দিয়েছে। সন্দীপ ঘোষের আইনজীবীর হাতেও সেই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী দিনে রেগুলার বেঞ্চে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে । এরফলে ফিক্সড ডিপোজিট ভেঙে টাকা তোলার সম্ভাবনা কতটা থাকল? সেই প্রশ্ন উঠছেই। আর্থিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে সন্দীপ ঘোষ ও তার পরিবার যাচ্ছে। মাসিক বেতন বন্ধ। ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগানোও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনজীবীর ফিজ দিতেও সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সন্দীপের আইনজীবী । সেই কারণেই ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙার জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন সন্দীপ ঘোষ।পারিবার ও অনান্য খরচ চালাতে স্টেট ব্যাঙ্কের কয়েকটি ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙতে চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন সন্দীপ।ওই মামলাতেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সন্দীপের কোন অ্যাকাউন্ট সিজ করা হয়েছে? সিবিআইকে সে বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি । বুধবার এ ব্যাপারে আদালতে রিপোর্ট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।সিবিআইয়ের তরফে এদিন আদালতে পেশ করা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২১ ও ২০২৩ সালে ৪টে ফিক্স ডিপোজিট করেছিলেন সন্দীপ ঘোষ। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর দাবি, -‘সেই সময়ই আরজি করে অপরাধ সংগঠিত হয়েছিল। ফলে ওই দুর্নীতির টাকার সঙ্গে ফিক্সড ডিপোজিটের কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা? তাখতিয়ে দেখা দরকার’।এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের পাশাপাশি এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটও সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত শুরু করেছে বলে আদালতে জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। এরপরই বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ, -‘সিবিআই পরবর্তী রিপোর্ট পেশ করবে। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’।