সিভিকদের নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা
আরজিকর কান্ডে জাতীয় টাস্কফোর্সের অগ্রগতি হয়নি কেন? কেন্দ্র কে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আরজিকর কান্ডে ষষ্ঠ শুনানি চলে। তাতে একাধারে জাতীয় টাস্ক ফোর্সের অগ্রগতি নিয়ে কেন্দ্র কে যেমন প্রশ্ন তোলে আদালত। ঠিক তেমনি সিভিকদের নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করে আদালত। আরজিকর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণকাণ্ডের তদন্তের মামলার শুনানি শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এদিন সেই মামলায় সিবিআই তার তদন্তের সর্বশেষ স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পাদরিওয়াল ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে। ওই মামলায় গত ৭ অক্টোবর চার্জশিট দেওয়া হয়েছে,তা আদালতে জানালেন সলিসিটর জেনারেল। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, -‘ ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সঞ্জয় রায় ছাড়া আর কারও ভূমিকা রয়েছে কিনা? তা নিয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন। এর পাশাপাশি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সময়ে যে আর্থিক অনিয়ম হয়েছিল, তা নিয়েও তদন্ত চলছে’। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রডূড় জানতে চান টাস্কফোর্স কী কাজ করেছে? এর প্রতুত্তরে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, -‘এ নিয়ে শেষ বৈঠক হয়েছিল গত ৯ সেপ্টেম্বর’। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত কাজ কতদূর এগিয়েছে? মেহতার জবাব,-‘ আমার মনে হয় টাস্ক ফোর্স যা করবে তা দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ, তাই হয়তো তারা সময় নিচ্ছে। টাস্কফোর্সের কাছে বেশকিছু সুপারিশ জমা পড়েছে। সংখ্যাটা কয়েক হাজার’।কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক দেশের সব রাজ্য এবং সমস্ত হাসপাতালের কাছে একটি প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রের পরিকাঠামো, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এই প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওই আইনজীবী । এদিন রাজ্য সরকার তাদের হলফনামা জমা দিল। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে এনটিএফ-কে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।রাজ্যের আইনজীবী বলেন, -‘ রাজ্যের সব হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে। আরজিকরে ৯০-৯৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। দেরি হওয়ার কারণ সিবিআইয়ের কাছ থেকে অনুমতি পেতে কিছুটা দেরি হওয়া। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে’।আদালতের তরফে বলা হয়, -‘বায়োমেট্রিক এন্ট্রি পদ্ধতি সুনিশ্চিত করতে হবে’। এর প্রতুত্তরে রাজ্যের তরফে বলা হয় -‘৩১ অক্টোবরের মধ্যে হয়ে যাবে’। এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে বড় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। কোন পদ্ধতিতে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়োগ করা হয় তা জানতে চাইলেন প্রধান বিচারপতি। উল্লেখ্য , আরজি কর কাণ্ডে শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠেছে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের ভূমিকা নিয়ে। মূল অভিযুক্ত হিসাবে একজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।যদিও নৃশংস ওই কাজ তিনি যে একা করতে পারেন তা মানতে নারাজ অনেকেই। বারবার সুর চড়িয়েছেন ডাক্তাররা। প্রশ্ন তুলেছেন ফরেন্সিক এক্সপার্টরাও। সন্দেহ দানা বেঁঁধেছে নাগরিক মহলের বড় অংশের মধ্যে। তবে, সম্প্রতি শিয়ালদহ আদালতে সদ্য জমা দেওয়া চার্জশিটে ধৃত সিভিককেই মূল অভিযুক্ত হিসাবে দেখিয়েছে সিবিআই। যদিও তা নিয়ে চাপানউতোর চলছে নানা মহলে। কোন পদ্ধতিতে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়োগ করা হয়, সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়োগকারী কে, কোন আইন বলে করা নিয়োগ হয়, মোট কত সিভিক ভলেন্টিয়ার আছে, কোথায় কোথায় তাদের নিয়োগ করা হয়েছে, কিভাবে তাদের ভেরিফিকেশন করা হচ্ছে সেই বিষয়ে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে রাজ্য সরকারকে। এদিনই এই নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।এর পাশাপাশি হাসপাতাল এবং স্কুলের মত সংবেদনশীল জায়গায় সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা যাবে না। এই নির্দেশও দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। এরই মধ্যে ‘রাত্রের সাথী’ প্রকল্পে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যায় এক আইনজীবী কে । ওই আইনজীবীর অভিযোগ, -‘এই প্রকল্পে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে’। যদিও রাজ্য সরকারের দাবি, -‘সবটাই নিয়ম মেনে হয়েছে’।সুপ্রিম কোর্টের আগেকার নির্দেশ অনুযায়ী আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার আদালতে জানান, -“ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি একটি নোডাল অফিসার নিয়োগ করেছে। যে নোডাল অফিসার নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ সহ তাঁকে নিয়ে অনলাইনে যেসব প্রচার চলছে সে সম্পর্কিত বিষয়গুলি দেখবেন।